ঢাকা ০৬:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত করণীয় ও খাদ্যতালিকা

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ০৯:০৯:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত

অনেক সময় হঠাৎ করে মাথা ঘোরে, দুর্বল লাগে বা চোখে ঝাপসা দেখেন? এমনটা হলে আপনার প্রেসার কমে যেতে পারে। প্রশ্ন হলো, প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত? চলুন জেনে নিই সহজ কিছু উপায় ও খাবার, যা আপনার শরীরকে দ্রুত স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে।

লো প্রেসার হলে করণীয়

প্রেসার কমে গেলে শরীরে তৎক্ষণিক কিছু লক্ষণ দেখা যায়। মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হওয়া এসবই সাধারণ লক্ষণ। অনেকেই ভয় পেয়ে যান, কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। যদি আপনি সময়মতো সঠিক খাবার ও বিশ্রাম নিতে পারেন, তাহলে দ্রুতই অবস্থার উন্নতি হয়।

প্রেসার কমে গেলে লক্ষণ

প্রেসার কমে গেলে শরীরে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায় যেমন: মাথা হালকা হয়ে যাওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা, বুক ধড়ফড় করা বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, এবং মাঝে মাঝে বমি ভাব বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। যখন এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তখনই বুঝতে হবে রক্তচাপ কমে গেছে।

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত

এই সময় শরীরের জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাবার খুব উপকারী। লবণযুক্ত পানি খাওয়া খুব কার্যকরী। কারণ লবণ শরীরের সোডিয়াম লেভেল বাড়িয়ে প্রেসার স্বাভাবিক করে। চিনি বা গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি তৎক্ষণাৎ শক্তি জোগায়। ডাবের পানি ও কলা এই দুইটি প্রাকৃতিকভাবে ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহ করে। ডিম, বাদাম, দুধ এই খাবারগুলো শক্তি দেয় এবং দীর্ঘ সময় প্রেসার স্থির রাখতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, সকালে খালি পেটে এক গ্লাস লবণ-চিনি মেশানো পানি খেলেই অনেক সময় দ্রুত স্বস্তি পাওয়া যায়।

প্রেসার কমার ঘরোয়া উপায়

প্রেসার কমে গেলে তৎক্ষণাৎ শুয়ে পড়ুন এবং পা দুটি মাথার চেয়ে উপরে রাখুন। এই অবস্থায় রক্ত সহজে মস্তিষ্কে পৌঁছায় এবং প্রেসার ঠিক হতে শুরু করে। এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খান, বা একটু গ্লুকোজ মিশিয়ে পান করুন। ঘরে থাকা বিস্কুট, কিশমিশ বা কলা খেলেও অনেক সময় দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।

প্রেসার বাড়ানোর খাবার

১. লবণাক্ত স্যুপ বা স্যালাইন।

২. কিশমিশ, খেজুর ও কলা।

৩. বাদাম ও দুধ।

৪. ডার্ক চকলেট (সীমিত পরিমাণে)।

৫. চিনি ও লেবুর শরবত।

হাইপোটেনশন খাওয়া দাওয়া

যারা দীর্ঘ সময় লো প্রেসারে ভোগেন, তাদের নিয়মিত খাবারে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। প্রতিদিনের ডায়েটে লবণ একটু বেশি রাখতে পারেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ভিটামিন বি১২ ও আয়রনযুক্ত খাবার বেশি খান যেমন: ডিম, পালং শাক, মুরগির মাংস।

প্রেসার কমে গেলে কি করা উচিত

প্রেসার কমে গেলে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে মাথা ঘোরার সম্ভাবনা বাড়ে। শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো প্রয়োজন যাতে রক্তচাপের পরিবর্তন সম্পর্কে আগে থেকেই জানা যায়। মনোযোগ দিয়ে খাবার খেতে হবে এবং কখনোই খালি পেটে বাইরে যাওয়া উচিত নয়।

প্রেসার কম হলে তাৎক্ষণিক করণীয়

• চিনি বা গ্লুকোজ পানি খাওয়া।

• মাথা নিচু রেখে পা উপরে তুলে শোয়া।

• কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নেওয়া।

• সম্ভব হলে প্রেসার মাপুন এবং রেকর্ড রাখুন।

কাদের বেশি প্রেসার কমার ঝুঁকি থাকে?

গর্ভবতী নারীদের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন হয় বলে প্রেসার কমে যেতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় হাইপোটেনশনে ভোগেন। যারা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকেন, তাদেরও প্রেসার কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসা

যদি ঘন ঘন প্রেসার কমে যায়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিভিন্ন সময় রক্ত পরীক্ষা ও ইসিজি করাতে হতে পারে। ডাক্তার আপনার জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী ওষুধ বা ডায়েট চার্ট দিতে পারেন।

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত? এই প্রশ্নের উত্তর এখন আর জটিল নয়। সঠিক খাদ্য ও সময়মতো পদক্ষেপই পারে আপনাকে সুস্থ রাখতে। ভয় না পেয়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য চেকআপ করুন। নিজের শরীরের প্রতি ভালোবাসা দেখান, কারণ স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত করণীয় ও খাদ্যতালিকা

আপডেট সময় : ০৯:০৯:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

অনেক সময় হঠাৎ করে মাথা ঘোরে, দুর্বল লাগে বা চোখে ঝাপসা দেখেন? এমনটা হলে আপনার প্রেসার কমে যেতে পারে। প্রশ্ন হলো, প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত? চলুন জেনে নিই সহজ কিছু উপায় ও খাবার, যা আপনার শরীরকে দ্রুত স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে।

লো প্রেসার হলে করণীয়

প্রেসার কমে গেলে শরীরে তৎক্ষণিক কিছু লক্ষণ দেখা যায়। মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হওয়া এসবই সাধারণ লক্ষণ। অনেকেই ভয় পেয়ে যান, কিন্তু চিন্তার কিছু নেই। যদি আপনি সময়মতো সঠিক খাবার ও বিশ্রাম নিতে পারেন, তাহলে দ্রুতই অবস্থার উন্নতি হয়।

প্রেসার কমে গেলে লক্ষণ

প্রেসার কমে গেলে শরীরে কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায় যেমন: মাথা হালকা হয়ে যাওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা, বুক ধড়ফড় করা বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, এবং মাঝে মাঝে বমি ভাব বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। যখন এই লক্ষণগুলো দেখা দেয়, তখনই বুঝতে হবে রক্তচাপ কমে গেছে।

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত

এই সময় শরীরের জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাবার খুব উপকারী। লবণযুক্ত পানি খাওয়া খুব কার্যকরী। কারণ লবণ শরীরের সোডিয়াম লেভেল বাড়িয়ে প্রেসার স্বাভাবিক করে। চিনি বা গ্লুকোজ মিশ্রিত পানি তৎক্ষণাৎ শক্তি জোগায়। ডাবের পানি ও কলা এই দুইটি প্রাকৃতিকভাবে ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহ করে। ডিম, বাদাম, দুধ এই খাবারগুলো শক্তি দেয় এবং দীর্ঘ সময় প্রেসার স্থির রাখতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, সকালে খালি পেটে এক গ্লাস লবণ-চিনি মেশানো পানি খেলেই অনেক সময় দ্রুত স্বস্তি পাওয়া যায়।

প্রেসার কমার ঘরোয়া উপায়

প্রেসার কমে গেলে তৎক্ষণাৎ শুয়ে পড়ুন এবং পা দুটি মাথার চেয়ে উপরে রাখুন। এই অবস্থায় রক্ত সহজে মস্তিষ্কে পৌঁছায় এবং প্রেসার ঠিক হতে শুরু করে। এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খান, বা একটু গ্লুকোজ মিশিয়ে পান করুন। ঘরে থাকা বিস্কুট, কিশমিশ বা কলা খেলেও অনেক সময় দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।

প্রেসার বাড়ানোর খাবার

১. লবণাক্ত স্যুপ বা স্যালাইন।

২. কিশমিশ, খেজুর ও কলা।

৩. বাদাম ও দুধ।

৪. ডার্ক চকলেট (সীমিত পরিমাণে)।

৫. চিনি ও লেবুর শরবত।

হাইপোটেনশন খাওয়া দাওয়া

যারা দীর্ঘ সময় লো প্রেসারে ভোগেন, তাদের নিয়মিত খাবারে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। প্রতিদিনের ডায়েটে লবণ একটু বেশি রাখতে পারেন, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ভিটামিন বি১২ ও আয়রনযুক্ত খাবার বেশি খান যেমন: ডিম, পালং শাক, মুরগির মাংস।

প্রেসার কমে গেলে কি করা উচিত

প্রেসার কমে গেলে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়া এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এতে মাথা ঘোরার সম্ভাবনা বাড়ে। শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো প্রয়োজন যাতে রক্তচাপের পরিবর্তন সম্পর্কে আগে থেকেই জানা যায়। মনোযোগ দিয়ে খাবার খেতে হবে এবং কখনোই খালি পেটে বাইরে যাওয়া উচিত নয়।

প্রেসার কম হলে তাৎক্ষণিক করণীয়

• চিনি বা গ্লুকোজ পানি খাওয়া।

• মাথা নিচু রেখে পা উপরে তুলে শোয়া।

• কিছুক্ষণের জন্য বিশ্রাম নেওয়া।

• সম্ভব হলে প্রেসার মাপুন এবং রেকর্ড রাখুন।

কাদের বেশি প্রেসার কমার ঝুঁকি থাকে?

গর্ভবতী নারীদের শরীরে হরমোনাল পরিবর্তন হয় বলে প্রেসার কমে যেতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় হাইপোটেনশনে ভোগেন। যারা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকেন, তাদেরও প্রেসার কমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসা

যদি ঘন ঘন প্রেসার কমে যায়, তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিভিন্ন সময় রক্ত পরীক্ষা ও ইসিজি করাতে হতে পারে। ডাক্তার আপনার জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস অনুযায়ী ওষুধ বা ডায়েট চার্ট দিতে পারেন।

প্রেসার কমে গেলে কি খাওয়া উচিত? এই প্রশ্নের উত্তর এখন আর জটিল নয়। সঠিক খাদ্য ও সময়মতো পদক্ষেপই পারে আপনাকে সুস্থ রাখতে। ভয় না পেয়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য চেকআপ করুন। নিজের শরীরের প্রতি ভালোবাসা দেখান, কারণ স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ।