সংবাদ শিরোনাম ::

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা বিস্তারিত জেনে নিন

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫ ৯১ বার পড়া হয়েছে

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা

নবাগত শিশুর জন্য গর্ভধারণের পর থেকেই প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। আর এই যত্নের মধ্যে অন্যতম বিষয়বস্তু হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। তাইতো আজকে আমি বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন সাধারণত প্রথম ৩ মাসে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এ সকল খাবার সাধারণত ভ্রুণের ভিত্তি এবং বিকাশের সহায়তা করেন।

ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার

এর মধ্যেও রয়েছে ডিম, ছোলা, ব্রুকলি, সূর্যমুখী বীজ, চিয়া সীড, কমলালেবু, আখরোট, পেস্তা বাদাম ইত্যাদি। এ ধরনের খাবার গুলি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি জন্মের সময় ভ্রণের মধ্যে যে ত্রুটি দেখা যায় সেটি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেয়।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকার মধ্যে রয়েছে আয়রন জাতীয় খাবার। এজন্য অবশ্যই পালং শাক, ছোলা, খেজুর, ডিম, মুরগী ইত্যাদি খেতে হবে। এ ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন যে প্রাণিজ উৎস থেকে সাধারণত উদ্ভিজ্জ্ব উৎস থেকে এই সকল খাবার গ্রহণ করা বেশি ভালো।

জিংক সমৃদ্ধ খাবার

জিংক আমাদের শরীরের পোস্ট গঠনে অত্যন্ত জরুরী। একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে ১১ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করা উচিত। তাইতো ডাক্তাররা জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দেশী মুরগির ডিম, কাজু, চিনা বাদাম, শিমের বিচি, গরুর মাংস, দুধ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে জিংক রয়েছে।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তাইতো ছোলা, সবুজ মটর, ভুট্টা, ব্রোকলব, শাকসবজি খাওয়া উচিত। এ সকল খাবারে পাশাপাশি ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি এসিড এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারও প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকায় ভেতরে মিঠা পানির কাটাযুক্ত মাছ, ডিম, চিয়া সিড ইত্যাদি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।

কেন প্রথম ৩ মাসের খাবার গুরুত্বপূর্ণ

মনে রাখবেন পুরো গর্ভকালীন সময়ের মধ্যে প্রথম ৩ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় একজন নারীর জীবনে। তাই এ সময় মা ও শিশুর উভয়ে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত এবং সুস্থ বিকাশের জন্য খাবার তালিকা জানা জরুরী। আমরা টিভি চ্যানেলে প্রায়ই দেখে থাকি ত্রুটিযুক্ত শিশু জন্মগ্রহণ কিংবা বিভিন্ন ধরনের অসুখ বিসুখসহ শিশু জন্ম নিয়ে থাকে। কারণ এই ৩ মাসে যদি সঠিক খাদ্যাভাস এবং জীবন যাপন না হয় তাহলে শিশু প্রধান অঙ্গ গুলোর গঠন ব্যাহত হতে পারে। আর যদি সঠিক এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা হয় তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং ভবিষ্যতে যে কোন ঝুঁকির সম্ভাবনা একদম কমে যায়।

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা প্রতিদিনের রুটিন

সকাল বেলা কি কি খাবেন

সাধারণত ডিম, দুধ, বাদাম ইত্যাদি দিয়ে সকলের নাস্তা শুরু করা উচিত। আর এই নাস্তা গ্রহণ অবশ্যই সকাল ৭ টা থেকে ৮ টার মধ্যেও করে নেওয়া ভালো। যদি দুধ থেকে সমস্যা হয় তাহলে দই খাওয়া যেতে পারে।

• তাছাড়া দুটি ডিমের সাদা অংশের অমলেট

• একটি কলা বা অন্য যে কোন মৌসুমী ফল

• পরিমিত পরিমানে ওটস খাওয়া যেতে পারে।

দুপুরের খাবারের আগে হালকা নাস্তা

• ১ গ্লাস নারিকেল পানি অথবা লেবু পানি

• ১ মুঠো বাদাম আখরোট

• একটি ছোট আপেল অথবা পেয়ারা।

দুপুরের খাবার

• এক কাপ ভাত অথবা ২ টি রুটি। রুটি অবশ্যই তেল ছাড়া খাওয়া উচিত।

• এক টুকরা মাছ অথবা মুরগির মাংস

• ১ কাপ সবজি (পালং শাক, লাউ, বরবটি, করোলা ইত্যাদি)

• ১ কাপ টক দই

• যেকোনো ধরনের একটি মৌসুমী ফল (পেয়ারা, আপেল, আমড়া ইত্যাদি)

তবে ফল খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত না।

গর্ভাবস্থায় বিকালে নাস্তা – প্রথম ৩ মাস

• এ সময়টাতে একটা দুধের সাথে গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে

• বিস্কুট অথবা মুড়ি

• একটি বয়েল ডিম এবং সাথে একটি কলা

গর্ভাবস্থায় রাতের খাবার

• ১ কাপ ভাত অথবা ২টি রুটি

• এক কাপ সবজি

• এটুকু মাছ অথবা ডিম

• এ ক্লাস গরম দুধ

এ সময়টাতে প্রয়োজন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। সেই সাথে বেশি সময় খালি পেটে থাকা উচিত নয়।

গর্ব অবস্থায় কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত প্রথম তিন মাস

• অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা, কফি ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়। কারণ এ সকল খাদ্য উপাদান অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাতেন সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

• বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে মিঠা পানির মাছ খাওয়া উচিত। এর কারণ হচ্ছে সামুদ্রিক মাছগুলোতে পাদের পরিমাণ বেশি থাকে যেটা কিনা ভ্রুণের বিকাশে বাধা তৈরি করতে পারে।

• হাফ বয়েল বা কাঁচা ডিম অথবা মাছ মাংস খাওয়া যাবে না। এতে করে সালমনে, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির সংক্রমণ হতে পারে। যায় কিনা প্রাথমিক সময়ের দিকেই গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য সাপ্লিমেন্ট কি দরকার

অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য একজন গর্ভবতী নারীর পরিপূরক খাবার হিসেবে সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে প্রথম ৩ মাসে ভ্রুণের বিকাশ, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গঠন, ভিটামিন এবং খনিজের চাহিদা মেটানোর জন্য এই সাপ্লিমেন্ট অনেক ডাক্তারি পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই ক্ষেত্রে ফলিক এসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, মাল্টিভিটামিন ইত্যাদি খাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত ডোজ কখনোই নিজের থেকে খাওয়া উচিত নয়।

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবারের পাশাপাশি যা খেয়াল রাখতে হবে

• নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যখনই গর্ভাবস্থার কনফারমেশন পাওয়া যাবে তখনই একজন বিশেষজ্ঞ গাইনি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তিনি প্রয়োজনীয় ইউএসটি, রক্ত, ইউরিন ইত্যাদি পরীক্ষা করে পরামর্শ দিবেন।

• এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম ও ঘুমের দরকার। সাধারণত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম এবং দুপুরের বিশ্রাম নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত কাজ কিংবা মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে হবে।

• আমি আগেও উল্লেখ করেছে গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের খাদ্য তালিকায় যে এ সময় কাঁচা, আধা সিদ্ধ, মাছ মাংস, চা-কফি, ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।

• সকল ধরনের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটের সমস্যা রোধে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। বমি হয় তাহলে হালকা খাবার বারবার খেতে হবে।

• সর্বোপরি মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখার জন্য ভালো বই পড়া, নিকট আত্মীয়র সাথে কথা বলা যেতে পারে।

• হালকা হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম করা উচিত। অতিরিক্ত ভারী ওজন তোলা এড়িয়ে চলতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের যোগ ব্যায়াম করা যেতে পারে।

• বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় টীকা দিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন।

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের সঠিক খাদ্য তালিকা একজন মা ও তার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করে। আশেপাশের মানুষের পরামর্শ কিংবা নিজের মন মত কোন উদ্যোগ গ্রহণ অথবা মেডিসিন সেবন করা উচিত নয়। সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করায় নিরাপদ এবং কার্যকর উপায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা বিস্তারিত জেনে নিন

আপডেট সময় : ০৯:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

নবাগত শিশুর জন্য গর্ভধারণের পর থেকেই প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। আর এই যত্নের মধ্যে অন্যতম বিষয়বস্তু হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। তাইতো আজকে আমি বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন সাধারণত প্রথম ৩ মাসে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ওমেগা ৩, ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। এ সকল খাবার সাধারণত ভ্রুণের ভিত্তি এবং বিকাশের সহায়তা করেন।

ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার

এর মধ্যেও রয়েছে ডিম, ছোলা, ব্রুকলি, সূর্যমুখী বীজ, চিয়া সীড, কমলালেবু, আখরোট, পেস্তা বাদাম ইত্যাদি। এ ধরনের খাবার গুলি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি জন্মের সময় ভ্রণের মধ্যে যে ত্রুটি দেখা যায় সেটি হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেয়।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকার মধ্যে রয়েছে আয়রন জাতীয় খাবার। এজন্য অবশ্যই পালং শাক, ছোলা, খেজুর, ডিম, মুরগী ইত্যাদি খেতে হবে। এ ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন যে প্রাণিজ উৎস থেকে সাধারণত উদ্ভিজ্জ্ব উৎস থেকে এই সকল খাবার গ্রহণ করা বেশি ভালো।

জিংক সমৃদ্ধ খাবার

জিংক আমাদের শরীরের পোস্ট গঠনে অত্যন্ত জরুরী। একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন কমপক্ষে ১১ মিলিগ্রাম জিংক গ্রহণ করা উচিত। তাইতো ডাক্তাররা জিংক ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দেশী মুরগির ডিম, কাজু, চিনা বাদাম, শিমের বিচি, গরুর মাংস, দুধ ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে জিংক রয়েছে।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। তাইতো ছোলা, সবুজ মটর, ভুট্টা, ব্রোকলব, শাকসবজি খাওয়া উচিত। এ সকল খাবারে পাশাপাশি ওমেগা থ্রি, ফ্যাটি এসিড এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারও প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকায় ভেতরে মিঠা পানির কাটাযুক্ত মাছ, ডিম, চিয়া সিড ইত্যাদি ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।

কেন প্রথম ৩ মাসের খাবার গুরুত্বপূর্ণ

মনে রাখবেন পুরো গর্ভকালীন সময়ের মধ্যে প্রথম ৩ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় একজন নারীর জীবনে। তাই এ সময় মা ও শিশুর উভয়ে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত এবং সুস্থ বিকাশের জন্য খাবার তালিকা জানা জরুরী। আমরা টিভি চ্যানেলে প্রায়ই দেখে থাকি ত্রুটিযুক্ত শিশু জন্মগ্রহণ কিংবা বিভিন্ন ধরনের অসুখ বিসুখসহ শিশু জন্ম নিয়ে থাকে। কারণ এই ৩ মাসে যদি সঠিক খাদ্যাভাস এবং জীবন যাপন না হয় তাহলে শিশু প্রধান অঙ্গ গুলোর গঠন ব্যাহত হতে পারে। আর যদি সঠিক এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা হয় তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে এবং ভবিষ্যতে যে কোন ঝুঁকির সম্ভাবনা একদম কমে যায়।

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের খাবার তালিকা প্রতিদিনের রুটিন

সকাল বেলা কি কি খাবেন

সাধারণত ডিম, দুধ, বাদাম ইত্যাদি দিয়ে সকলের নাস্তা শুরু করা উচিত। আর এই নাস্তা গ্রহণ অবশ্যই সকাল ৭ টা থেকে ৮ টার মধ্যেও করে নেওয়া ভালো। যদি দুধ থেকে সমস্যা হয় তাহলে দই খাওয়া যেতে পারে।

• তাছাড়া দুটি ডিমের সাদা অংশের অমলেট

• একটি কলা বা অন্য যে কোন মৌসুমী ফল

• পরিমিত পরিমানে ওটস খাওয়া যেতে পারে।

দুপুরের খাবারের আগে হালকা নাস্তা

• ১ গ্লাস নারিকেল পানি অথবা লেবু পানি

• ১ মুঠো বাদাম আখরোট

• একটি ছোট আপেল অথবা পেয়ারা।

দুপুরের খাবার

• এক কাপ ভাত অথবা ২ টি রুটি। রুটি অবশ্যই তেল ছাড়া খাওয়া উচিত।

• এক টুকরা মাছ অথবা মুরগির মাংস

• ১ কাপ সবজি (পালং শাক, লাউ, বরবটি, করোলা ইত্যাদি)

• ১ কাপ টক দই

• যেকোনো ধরনের একটি মৌসুমী ফল (পেয়ারা, আপেল, আমড়া ইত্যাদি)

তবে ফল খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত না।

গর্ভাবস্থায় বিকালে নাস্তা – প্রথম ৩ মাস

• এ সময়টাতে একটা দুধের সাথে গ্রিন টি খাওয়া যেতে পারে

• বিস্কুট অথবা মুড়ি

• একটি বয়েল ডিম এবং সাথে একটি কলা

গর্ভাবস্থায় রাতের খাবার

• ১ কাপ ভাত অথবা ২টি রুটি

• এক কাপ সবজি

• এটুকু মাছ অথবা ডিম

• এ ক্লাস গরম দুধ

এ সময়টাতে প্রয়োজন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। সেই সাথে বেশি সময় খালি পেটে থাকা উচিত নয়।

গর্ব অবস্থায় কোন খাবারগুলো এড়িয়ে চলা উচিত প্রথম তিন মাস

• অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় খাবার যেমন চা, কফি ইত্যাদি খাওয়া উচিত নয়। কারণ এ সকল খাদ্য উপাদান অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাতেন সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

• বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ এড়িয়ে মিঠা পানির মাছ খাওয়া উচিত। এর কারণ হচ্ছে সামুদ্রিক মাছগুলোতে পাদের পরিমাণ বেশি থাকে যেটা কিনা ভ্রুণের বিকাশে বাধা তৈরি করতে পারে।

• হাফ বয়েল বা কাঁচা ডিম অথবা মাছ মাংস খাওয়া যাবে না। এতে করে সালমনে, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির সংক্রমণ হতে পারে। যায় কিনা প্রাথমিক সময়ের দিকেই গর্ভপাতের কারণ হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য সাপ্লিমেন্ট কি দরকার

অতিরিক্ত পুষ্টির জন্য একজন গর্ভবতী নারীর পরিপূরক খাবার হিসেবে সাপ্লিমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষ করে প্রথম ৩ মাসে ভ্রুণের বিকাশ, অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গঠন, ভিটামিন এবং খনিজের চাহিদা মেটানোর জন্য এই সাপ্লিমেন্ট অনেক ডাক্তারি পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এই ক্ষেত্রে ফলিক এসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, মাল্টিভিটামিন ইত্যাদি খাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত ডোজ কখনোই নিজের থেকে খাওয়া উচিত নয়।

গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩ মাসের খাবারের পাশাপাশি যা খেয়াল রাখতে হবে

• নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যখনই গর্ভাবস্থার কনফারমেশন পাওয়া যাবে তখনই একজন বিশেষজ্ঞ গাইনি চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। তিনি প্রয়োজনীয় ইউএসটি, রক্ত, ইউরিন ইত্যাদি পরীক্ষা করে পরামর্শ দিবেন।

• এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম ও ঘুমের দরকার। সাধারণত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম এবং দুপুরের বিশ্রাম নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত কাজ কিংবা মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে হবে।

• আমি আগেও উল্লেখ করেছে গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের খাদ্য তালিকায় যে এ সময় কাঁচা, আধা সিদ্ধ, মাছ মাংস, চা-কফি, ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।

• সকল ধরনের কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পেটের সমস্যা রোধে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। বমি হয় তাহলে হালকা খাবার বারবার খেতে হবে।

• সর্বোপরি মানসিক প্রশান্তি বজায় রাখার জন্য ভালো বই পড়া, নিকট আত্মীয়র সাথে কথা বলা যেতে পারে।

• হালকা হাঁটাহাঁটি, ব্যায়াম করা উচিত। অতিরিক্ত ভারী ওজন তোলা এড়িয়ে চলতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শে বিভিন্ন ধরনের যোগ ব্যায়াম করা যেতে পারে।

• বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় টীকা দিতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন করুন।

গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের সঠিক খাদ্য তালিকা একজন মা ও তার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করে। আশেপাশের মানুষের পরামর্শ কিংবা নিজের মন মত কোন উদ্যোগ গ্রহণ অথবা মেডিসিন সেবন করা উচিত নয়। সর্বদা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করায় নিরাপদ এবং কার্যকর উপায়।