ঢাকা ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আবার চালু হলো আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ১০:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫ ২৫৫ বার পড়া হয়েছে

আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আবার চালু হলো আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া, যা প্রবাসীদের জন্য এক বিশাল সুখবর হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আমিরাত সরকার অবশেষে বাংলাদেশিদের জন্য ই-ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চালু করেছে। এখন ঘরে বসেই অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে, যা সময় ও খরচ দুই-ই কমাবে। প্রবাসে কাজ, শিক্ষা বা ভ্রমণের পরিকল্পনা করা অনেক সহজ হবে এই নতুন ব্যবস্থায়।

কেন বন্ধ ছিল আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া?

২০২১ সালে করোনার প্রভাবের কারণেআরব আমিরাত সরকার অনেক দেশের জন্য অনলাইন ভিসা আবেদন বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশও ছিল সেই তালিকায়। নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অভ্যন্তরীণ নীতিমালার কারণে ভিসা প্রসেসিং বন্ধ রাখা হয়। তবে পরিস্থিতির উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নীতিতে নমনীয়তা আসার পর পুনরায় চালু হলো এই সুবিধা।

ইউএই ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ আমিরাতে কাজ করতে যান। বিশেষ করে দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ এসব শহরে বাংলাদেশিদের চাহিদা অনেক। অনলাইনে ভিসা আবেদন চালু হওয়ায় গ্রামের একজন সাধারণ মানুষও এখন সহজে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতে করে দালালের মাধ্যমে আবেদন করে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

অনলাইন ভিসা আবেদন করার পদ্ধতি

১. প্রথমে যেতে হবে icp ওয়েবসাইটে।
২. সেখানে ‘eVisa’ অপশনে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
৩. আপনার পাসপোর্টের স্ক্যান কপি, ছবি, এবং ভিসা টাইপ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে।
৪. এরপর অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে হবে।
৫. সবকিছু ঠিক থাকলে ৩-৭ কার্যদিবসের মধ্যেই ইমেইলে ভিসা চলে আসবে।

উদাহরণ: একজন কৃষক রফিকুল ইসলাম তার ছেলের কাছ থেকে শিখে অনলাইনে আবেদন করেন এবং ৫ দিনের মধ্যে ভিসা পান।

আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া বিস্তারিত 

এখন বাংলাদেশি নাগরিকরা সরাসরি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। কোনো এজেন্টের প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র সঠিক তথ্য দিলেই ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই প্রক্রিয়াটি ২০২৫ সালের এপ্রিলে পুনরায় চালু হয়েছে এবং ইতিমধ্যে হাজারো আবেদন জমা পড়েছে।

আরব আমিরাত অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় লাগবে যেসব ডকুমেন্ট

• বৈধ পাসপোর্ট কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি।

• পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি।

• হোটেল বুকিং বা স্পন্সর লেটার যদি থাকে।

• কাজের ভিসার জন্য স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের অনুমতিপত্র।

• ফ্লাইট বুকিং অনেক সময় ঐচ্ছিক হলেও সাহায্য করে।

আরব আমিরাত টুরিস্ট ভিসা ও কাজের ভিসা কোনটা বেছে নেবেন?

যদি আপনি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যান, তাহলে ট্যুরিস্ট ভিসা বেছে নিতে পারেন। এটি সাধারণত ৩০ দিন থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত থাকে। অন্যদিকে, কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে নিয়োগকর্তার মাধ্যমে স্পন্সরশিপ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য ভিসা অ্যাপ্লাই করবে এবং আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট পাঠাতে হবে।

ইউএই ভিসা আপডেট ২০২৫ অনুযায়ী নতুন নিয়ম কী?

• আগের তুলনায় আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়েছে।

• ডকুমেন্ট যাচাই এখন ডিজিটাল মাধ্যমে হয়।

• ভিসা ফি অনলাইনে পেমেন্ট করা যায় মোবাইল ব্যাংকিং, কার্ড অথবা আন্তর্জাতিক গেটওয়ের মাধ্যমে।

• ২০২৫ সাল থেকে নির্ধারিত কিছু পেশার লোকদের জন্য বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক অপশনও চালু হয়েছে।

বাংলাদেশি প্রবাসীদের অভিমত

মালেক নামে একজন প্রবাসী জানান, আগে দালালদের মাধ্যমে আবেদন করতাম, এখন নিজেরাই করতে পারছি, এতে অনেক সুবিধা হচ্ছে। আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা ভিসার আবেদন অনেক সহজ হয়ে গেছে, প্রক্রিয়া বোঝা সহজ। এই নতুন ব্যবস্থা সত্যিই মানবিক এবং দরকারি উদ্যোগ বলে অনেকেই মত দিয়েছেন।

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চালু হওয়া। এটি নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় সাধারণ মানুষও এখন বিশ্বজুড়ে নতুন সুযোগের মুখোমুখি হতে পারছে। আপনি যদি ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তাহলে আজই প্রস্তুতি নিন এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করুন। ভবিষ্যতের পথে এটি হতে পারে আপনার প্রথম পদক্ষেপ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আবার চালু হলো আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

আপডেট সময় : ১০:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আবার চালু হলো আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া, যা প্রবাসীদের জন্য এক বিশাল সুখবর হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আমিরাত সরকার অবশেষে বাংলাদেশিদের জন্য ই-ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চালু করেছে। এখন ঘরে বসেই অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে, যা সময় ও খরচ দুই-ই কমাবে। প্রবাসে কাজ, শিক্ষা বা ভ্রমণের পরিকল্পনা করা অনেক সহজ হবে এই নতুন ব্যবস্থায়।

কেন বন্ধ ছিল আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া?

২০২১ সালে করোনার প্রভাবের কারণেআরব আমিরাত সরকার অনেক দেশের জন্য অনলাইন ভিসা আবেদন বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশও ছিল সেই তালিকায়। নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যঝুঁকি ও অভ্যন্তরীণ নীতিমালার কারণে ভিসা প্রসেসিং বন্ধ রাখা হয়। তবে পরিস্থিতির উন্নতি এবং আন্তর্জাতিক ভ্রমণ নীতিতে নমনীয়তা আসার পর পুনরায় চালু হলো এই সুবিধা।

ইউএই ভিসা বাংলাদেশিদের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ আমিরাতে কাজ করতে যান। বিশেষ করে দুবাই, আবুধাবি, শারজাহ এসব শহরে বাংলাদেশিদের চাহিদা অনেক। অনলাইনে ভিসা আবেদন চালু হওয়ায় গ্রামের একজন সাধারণ মানুষও এখন সহজে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতে করে দালালের মাধ্যমে আবেদন করে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

অনলাইন ভিসা আবেদন করার পদ্ধতি

১. প্রথমে যেতে হবে icp ওয়েবসাইটে।
২. সেখানে ‘eVisa’ অপশনে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।
৩. আপনার পাসপোর্টের স্ক্যান কপি, ছবি, এবং ভিসা টাইপ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করতে হবে।
৪. এরপর অনলাইনে ফি পরিশোধ করতে হবে।
৫. সবকিছু ঠিক থাকলে ৩-৭ কার্যদিবসের মধ্যেই ইমেইলে ভিসা চলে আসবে।

উদাহরণ: একজন কৃষক রফিকুল ইসলাম তার ছেলের কাছ থেকে শিখে অনলাইনে আবেদন করেন এবং ৫ দিনের মধ্যে ভিসা পান।

আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া বিস্তারিত 

এখন বাংলাদেশি নাগরিকরা সরাসরি অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। কোনো এজেন্টের প্রয়োজন নেই, শুধুমাত্র সঠিক তথ্য দিলেই ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই প্রক্রিয়াটি ২০২৫ সালের এপ্রিলে পুনরায় চালু হয়েছে এবং ইতিমধ্যে হাজারো আবেদন জমা পড়েছে।

আরব আমিরাত অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় লাগবে যেসব ডকুমেন্ট

• বৈধ পাসপোর্ট কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদি।

• পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি।

• হোটেল বুকিং বা স্পন্সর লেটার যদি থাকে।

• কাজের ভিসার জন্য স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের অনুমতিপত্র।

• ফ্লাইট বুকিং অনেক সময় ঐচ্ছিক হলেও সাহায্য করে।

আরব আমিরাত টুরিস্ট ভিসা ও কাজের ভিসা কোনটা বেছে নেবেন?

যদি আপনি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যান, তাহলে ট্যুরিস্ট ভিসা বেছে নিতে পারেন। এটি সাধারণত ৩০ দিন থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত থাকে। অন্যদিকে, কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চাইলে নিয়োগকর্তার মাধ্যমে স্পন্সরশিপ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান আপনার জন্য ভিসা অ্যাপ্লাই করবে এবং আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট পাঠাতে হবে।

ইউএই ভিসা আপডেট ২০২৫ অনুযায়ী নতুন নিয়ম কী?

• আগের তুলনায় আবেদন প্রক্রিয়া আরও সহজ হয়েছে।

• ডকুমেন্ট যাচাই এখন ডিজিটাল মাধ্যমে হয়।

• ভিসা ফি অনলাইনে পেমেন্ট করা যায় মোবাইল ব্যাংকিং, কার্ড অথবা আন্তর্জাতিক গেটওয়ের মাধ্যমে।

• ২০২৫ সাল থেকে নির্ধারিত কিছু পেশার লোকদের জন্য বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক অপশনও চালু হয়েছে।

বাংলাদেশি প্রবাসীদের অভিমত

মালেক নামে একজন প্রবাসী জানান, আগে দালালদের মাধ্যমে আবেদন করতাম, এখন নিজেরাই করতে পারছি, এতে অনেক সুবিধা হচ্ছে। আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষা ভিসার আবেদন অনেক সহজ হয়ে গেছে, প্রক্রিয়া বোঝা সহজ। এই নতুন ব্যবস্থা সত্যিই মানবিক এবং দরকারি উদ্যোগ বলে অনেকেই মত দিয়েছেন।

বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য আরব আমিরাতের অনলাইন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া চালু হওয়া। এটি নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় সাধারণ মানুষও এখন বিশ্বজুড়ে নতুন সুযোগের মুখোমুখি হতে পারছে। আপনি যদি ভিসার জন্য আবেদন করতে চান, তাহলে আজই প্রস্তুতি নিন এবং অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করুন। ভবিষ্যতের পথে এটি হতে পারে আপনার প্রথম পদক্ষেপ।