ঢাকা ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন ১৭

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ১১:৪২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১১৮ বার পড়া হয়েছে

চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন

অ্যাপল একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে চমকে দিয়েছে পুরো প্রযুক্তি দুনিয়াকে। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন। এই সিদ্ধান্ত শুধু অ্যাপল বা ভারত নয়, চীন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও দারুণ প্রভাব ফেলতে চলেছে।

অ্যাপলের এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ কী?

গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য দ্বন্দ্ব অ্যাপলকে নতুন বিকল্প খুঁজতে বাধ্য করেছে। চীনে উৎপাদনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা অ্যাপলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছিল। অন্যদিকে, ভারতের উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ভারত সরকারও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য নানা সুবিধা দিয়েছে, যেমন: মেড ইন ইন্ডিয়া নীতি, কর ছাড় এবং দ্রুত অনুমোদন প্রক্রিয়া। এছাড়া, ভারতের বিশাল দক্ষ কর্মশক্তি অ্যাপলের নজরে পড়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের আইফোন ১৭ 

২০২৫ সালে অ্যাপল যে আইফোন ১৭ গুলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করবে, সেগুলো সবই ভারতে তৈরি হবে। এখন পর্যন্ত চীন ছিল আইফোন উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র।কিন্তু এবার সেই আধিপত্য শেষের পথে। এই সিদ্ধান্ত অ্যাপলের সরবরাহ চেইনকে আরও স্থিতিশীল এবং বহুমুখী করবে।

আইফোন তৈরি হবে ভারতের কোন কোন শহরে?

বর্তমানে ভারতের চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরু শহরেই অ্যাপলের আইফোন তৈরি হচ্ছে। ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন, এই তিনটি বড় কোম্পানি ভারতে অ্যাপলের হয়ে কাজ করছে। চেন্নাইয়ের কাছে ফক্সকনের বিশাল ফ্যাক্টরিতে প্রতিদিন হাজার হাজার আইফোন তৈরি হচ্ছে। বেঙ্গালুরুর ফ্যাক্টরিতে নতুন করে আরও হাজারো কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।

ভারতীয় প্রযুক্তি খাতে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব

অ্যাপলের এই পদক্ষেপ ভারতীয় প্রযুক্তি খাতকে অনেক দূর এগিয়ে দেবে। বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং ভারতে প্রযুক্তির অবকাঠামো আরও উন্নত হবে।

চীনে আইফোন উৎপাদন বন্ধ চীনের জন্য বড় ধাক্কা

চীনে আইফোন উৎপাদন বন্ধ হওয়া চীনের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা। অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। চীন দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তি উৎপাদনের বড় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই অবস্থান ভারত দখল করে নিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন রপ্তানির নতুন দিক

ভারতে তৈরি আইফোন এখন যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি রপ্তানি হবে।এতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অ্যাপলের পণ্যের দাম ও সরবরাহে স্থিতিশীলতা আসবে। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক চাপ থেকেও কিছুটা মুক্তি মিলবে অ্যাপলের।

উৎপাদন খাতে ভারত-চীন প্রতিযোগিতা বাড়ছে

অ্যাপলের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত ও চীনের মধ্যে উৎপাদন খাতে প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যাবে। এই প্রতিযোগিতা প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ভারত সরকার ইতিমধ্যে নতুন প্রযুক্তি অঞ্চল গড়ে তুলছে, যেখানে ভবিষ্যতে আরও কোম্পানি আসতে আগ্রহী হবে।

ভারতের উত্থান ও চীনের প্রভাব কমে আসা

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন। এই ঘোষণা নতুন যুগের সূচনা করছে। ভারত হয়ে উঠছে বিশ্ব প্রযুক্তি উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র। চীনের একাধিপত্য ভাঙছে, আর ভারত জিতে নিচ্ছে বড় বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের আস্থা। এই পরিবর্তন শুধু প্রযুক্তির ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও বিশাল এক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন ১৭

আপডেট সময় : ১১:৪২:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

অ্যাপল একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে চমকে দিয়েছে পুরো প্রযুক্তি দুনিয়াকে। ২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন। এই সিদ্ধান্ত শুধু অ্যাপল বা ভারত নয়, চীন এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও দারুণ প্রভাব ফেলতে চলেছে।

অ্যাপলের এই সিদ্ধান্তের পেছনের কারণ কী?

গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য দ্বন্দ্ব অ্যাপলকে নতুন বিকল্প খুঁজতে বাধ্য করেছে। চীনে উৎপাদনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা অ্যাপলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছিল। অন্যদিকে, ভারতের উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ভারত সরকারও প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর জন্য নানা সুবিধা দিয়েছে, যেমন: মেড ইন ইন্ডিয়া নীতি, কর ছাড় এবং দ্রুত অনুমোদন প্রক্রিয়া। এছাড়া, ভারতের বিশাল দক্ষ কর্মশক্তি অ্যাপলের নজরে পড়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের আইফোন ১৭ 

২০২৫ সালে অ্যাপল যে আইফোন ১৭ গুলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করবে, সেগুলো সবই ভারতে তৈরি হবে। এখন পর্যন্ত চীন ছিল আইফোন উৎপাদনের প্রধান কেন্দ্র।কিন্তু এবার সেই আধিপত্য শেষের পথে। এই সিদ্ধান্ত অ্যাপলের সরবরাহ চেইনকে আরও স্থিতিশীল এবং বহুমুখী করবে।

আইফোন তৈরি হবে ভারতের কোন কোন শহরে?

বর্তমানে ভারতের চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরু শহরেই অ্যাপলের আইফোন তৈরি হচ্ছে। ফক্সকন, উইস্ট্রন এবং পেগাট্রন, এই তিনটি বড় কোম্পানি ভারতে অ্যাপলের হয়ে কাজ করছে। চেন্নাইয়ের কাছে ফক্সকনের বিশাল ফ্যাক্টরিতে প্রতিদিন হাজার হাজার আইফোন তৈরি হচ্ছে। বেঙ্গালুরুর ফ্যাক্টরিতে নতুন করে আরও হাজারো কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে।

ভারতীয় প্রযুক্তি খাতে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব

অ্যাপলের এই পদক্ষেপ ভারতীয় প্রযুক্তি খাতকে অনেক দূর এগিয়ে দেবে। বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো এখন ভারতের দিকে তাকিয়ে আছে। এর ফলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং ভারতে প্রযুক্তির অবকাঠামো আরও উন্নত হবে।

চীনে আইফোন উৎপাদন বন্ধ চীনের জন্য বড় ধাক্কা

চীনে আইফোন উৎপাদন বন্ধ হওয়া চীনের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা। অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। চীন দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তি উৎপাদনের বড় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই অবস্থান ভারত দখল করে নিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন রপ্তানির নতুন দিক

ভারতে তৈরি আইফোন এখন যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি রপ্তানি হবে।এতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অ্যাপলের পণ্যের দাম ও সরবরাহে স্থিতিশীলতা আসবে। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক চাপ থেকেও কিছুটা মুক্তি মিলবে অ্যাপলের।

উৎপাদন খাতে ভারত-চীন প্রতিযোগিতা বাড়ছে

অ্যাপলের এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারত ও চীনের মধ্যে উৎপাদন খাতে প্রতিযোগিতা আরও বেড়ে যাবে। এই প্রতিযোগিতা প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ভারত সরকার ইতিমধ্যে নতুন প্রযুক্তি অঞ্চল গড়ে তুলছে, যেখানে ভবিষ্যতে আরও কোম্পানি আসতে আগ্রহী হবে।

ভারতের উত্থান ও চীনের প্রভাব কমে আসা

২০২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির জন্য চীন ছেড়ে ভারতে তৈরি হবে অ্যাপেলের সব আইফোন। এই ঘোষণা নতুন যুগের সূচনা করছে। ভারত হয়ে উঠছে বিশ্ব প্রযুক্তি উৎপাদনের নতুন কেন্দ্র। চীনের একাধিপত্য ভাঙছে, আর ভারত জিতে নিচ্ছে বড় বড় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের আস্থা। এই পরিবর্তন শুধু প্রযুক্তির ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও বিশাল এক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।