বর্তমানে ঘোড়ার গোশতের দাম কত এবং ঘোড়ার গোশত খাওয়ার বিধান কি জেনে নিন

- আপডেট সময় : ১০:১৪:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫ ১৪২ বার পড়া হয়েছে
বর্তমান সময়ে নানা ধরনের মাংসের প্রতি মানুষের কৌতূহল বেড়েছে। গরু, খাসি, মুরগির পাশাপাশি কিছু দেশ ঘোড়ার গোশতও খেয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে এটি খুব বেশি প্রচলিত নয়। অনেকের মনে প্রশ্ন বর্তমানে ঘোড়ার গোশতের দাম কত এবং ঘোড়ার গোশত খাওয়ার বিধান কি? এই বিষয়ে বিস্তারিত জানবো আজকের এই কন্টেন্টে।
বর্তমানে বাংলাদেশে ঘোড়ার গোশতের দাম কত বিস্তারিত
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘোড়ার মাংসের দাম একেক রকম হয়ে থাকে এবং এটি মূলত বাজারের চাহিদা এবং সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। আন্তর্জাতিক বাজারে, বিশেষ করে ইউরোপের কিছু দেশে, প্রতি কেজি ঘোড়ার গোশত ১০ থেকে ২৫ ডলারের মধ্যে পাওয়া যায়। চীন এবং মঙ্গোলিয়ার মতো দেশগুলিতে ঘোড়ার মাংসের দাম তুলনামূলকভাবে সস্তা থাকে, যেখানে ফ্রান্সে এর দাম কিছুটা বেশি। বাংলাদেশের মধ্যে ঘোড়ার মাংস এখনও খুব জনপ্রিয় নয়, তবে কিছু অফলাইন বাজারে পাওয়ার চেষ্টা করা যায়। এখানে ঘোড়ার গোশতের দাম আনুমানিক ২৫০-৩৫০ টাকা হতে পারে, তবে এটি খুবই বিরল এবং সবার জন্য সহজলভ্য নয়।
ঘোড়ার গোশত খাওয়া কি ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মে বৈধ?
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ঘোড়ার মাংস খাওয়া নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। ইসলামে, যদিও কিছু সাহাবি ঘোড়ার গোশত খাওয়ার কথা বলেছেন, তবে এটি নিরুৎসাহিতও করা হয়েছে। অনেক ইসলামিক স্কলার মতে, ঘোড়ার মাংসখাওয়া হালাল হলেও মুসলমানদের মধ্যে এটি খাওয়ার প্রচলন খুব কম। হিন্দু ধর্মে ঘোড়া সাধারণত পবিত্র প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়, তাই এটি খাওয়া নিষিদ্ধ। খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ ধর্মে ঘোড়ার মাংস খাওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বিধান নেই, তবে কিছু সম্প্রদায় এটি খেতে অভ্যস্ত নয়।
ঘোড়ার গোশতের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা
ঘোড়ার মাংসে বেশ কিছু পুষ্টিগুণ রয়েছে যা শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন বি১২ থাকে, যা শরীরের পেশি গঠন এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক। ঘোড়ার মাংস সাধারণত কম চর্বিযুক্ত, তাই এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, খুব বেশি খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে এবং কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন যে, এটি খাওয়ার আগে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
বিশ্বে কোন কোন দেশে ঘোড়ার গোশত জনপ্রিয়?
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘোড়ার মাংস খাওয়ার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। চীন এবং মঙ্গোলিয়া এটি খুব জনপ্রিয়। সেখানে ঘোড়ার মাংস রান্না করা হয় বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবারে, যেমন স্টেক এবং স্যুপ। ফ্রান্সেও ঘোড়ার মাংস বিশেষভাবে জনপ্রিয় এবং এটি স্টেক বা কার্পাচিও তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলির মতোই, ইতালিতেও কিছু অঞ্চলে ঘোড়ার মাংসের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে বাংলাদেশে এটি একটি বিরল খাবার, এবং সাধারণ মানুষ এর প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখায় না।
ঘোড়ার গোশত কেন বিরল এবং কেন এটি বেশি খাওয়া হয় না?
ঘোড়ার মাংস অন্যান্য দেশে জনপ্রিয় হলেও এটি অনেক দেশে বিরল হয়ে পড়েছে। এর প্রধান কারণ হলো ঘোড়া সাধারণত পোষা প্রাণী হিসেবে পরিচিত এবং বহু মানুষের কাছে এটি একটি আবেগপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়। অনেক দেশে ঘোড়াকে আদরের প্রাণী হিসেবে রাখা হয়, ফলে এটি খাওয়া সামাজিকভাবে অস্বাভাবিক হয়ে থাকে। কিছু দেশে, যেমন ভারতের বেশ কিছু অঞ্চলে, ঘোড়ার মাংস খাওয়া আইনি দৃষ্টিকোণ থেকেও নিষিদ্ধ। এছাড়া, ঘোড়ার মাংস নিয়ে প্রচলিত অনেক ভুল ধারণাও এটি খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দিয়েছে।
শেষ কথা
বর্তমানে ঘোড়ার গোশতের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে এবং বাংলাদেশে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে এটি একটি বিরল খাবার। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি খাওয়া নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কিছু দেশ ঘোড়ার মাংস খেতে প্রচলিত হলেও, অন্যান্য দেশে এটি খুব কম প্রচলিত। পুষ্টিগুণের দিক থেকে, ঘোড়ার মাংস স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে এটি খাওয়ার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যদি কেউ এটি খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে তাদের উচিত নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও স্বাস্থ্যগত দৃষ্টিভঙ্গি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
আজকে সূর্যগ্রহণ চন্দ্রগ্রহণ ২০২৫। বিস্তারিত জানতে এখানে যান।