সংবাদ শিরোনাম ::

জেনে নিন বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ১০:৩৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে

বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করব

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য জিনিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাবান। আপনি ইন্টারনেটে নিশ্চয়ই সার্চ করেছেন বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন।যদিও এই প্রয়োজনীয় বস্তুটি আমরা দোকান হতে ক্রয় করে থাকি তারপরেও ঘরোয়া উপায়েও বাসায় বসে এটি তৈরি করতে পারবেন। অনেকেই হয়তোবা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না যে বাসায় কিভাবে এটির বানানো যায়। তাইতো নিয়মটি জানতে নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন।

আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকরণ থাকে তাহলে এটি বানানো মোটেই কঠিন কিছু নয়। সেই সাথে ঘণ্টাখানেক সময়ও প্রয়োজন। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি বিধায় সকল সাবানের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না। কারখানায় উৎপাদনের সময় চোখ তৈরিতে লাই নামক এক ধরনের ক্ষার জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়। কেউ চাইলে এই উপাদান বাদ দিয়ে বাসায় বসেই এটি তৈরি করতে পারবে।

বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন বিস্তারিত 

প্রথমেই আলোচনা করব মধু ও দুধ দিয়ে সাবান তৈরির প্রক্রিয়া। আসলে একটি সোপ তৈরিতে কি কি উপাদান ব্যবহার করেছেন সেটি নির্ভর করে সাবানের বেসের উপর। এই ধাপে দুধ দিয়ে আমরা তৈরি করব সাবানের বেস। এর জন্য আপনাকে অর্ধেক গ্লাস সাবানের বেস ঢেলে নিতে হবে। বেস আপনি বাজার বা অনলাইন হতে কিনতে পারবেন।। তারপর সেই বেসগুলোকে টুকরো টুকরো করে আস্তে আস্তে তাপ দিয়ে গলিয়ে নিতে হবে। এর জন্য মাইক্রোওভেন কিংবা জোলা ব্যবহার করতে পারবেন।

যখন পুরোপুরি ভাবে সাবানের বেসগুলো গলে যাবে তখন সেখানে কয়েক চামচ মধু এবং কয়েক ফাটা সাবানের রং মিশ্রিত করতে হবে। মধু এবং সাবানের রং উভয়েই আপনারা বাজারে পাবেন। সেই সাথে এই ব্যস্ত কিনতে পাওয়া যায়। তারপর মেশানো শেষ হলে কোন বক্সে সেগুলো জমতে দিন। পুরোপুরিভাবে জমা শেষ হয়ে গেলে সাবান গুলো বের করে আনুন এবং ব্যবহার করুন।

কিভাবে চা পাতা দিয়ে বাড়িতে সাবান তৈরি করব

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় একটি পানীয় হচ্ছে চা। যাদের নিয়মিত চা খাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের বাড়িতে নিশ্চয়ই চা পাতা আছে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই চা পাতা দিয়েও সাবান তৈরি করা যায়। চা পাতার পাশাপাশি আরও প্রয়োজন দুটিব্যাগ এবং ২৫০ গ্রাম সাবানের বেস। এর সাথে আরো প্রয়োজন এসেনশিয়াল অয়েল এবং অরেঞ্জ অয়েল। প্রথমে সাবানের বেস গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে তাপ দিয়ে গুলিয়ে নিতে হবে।

মনে রাখবেন তাপ দিয়ে গলানোর সময় সেটাকে বারবার নিয়ে যেতে হবে। প্রায় দশ মিনিট ধরে নাড়ার পর আস্তে আস্তে সেটির মধ্যে চা পাতা এবং অন্যান্য উপাদান গুলি মিশ্রিত করে নাড়তে থাকুন। এরপর যেকোনো একটি পাত্রে অন্ততপক্ষে দুই দিন রেখে দিন। তারপর পুরোপুরি ভাবে সাবান গলে গেলে সেটি ব্যবহার করতে পারবেন।

ঘরে বসে সাবান তৈরি করার আরো একটি প্রক্রিয়া

ঘরে বসে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন তার জন্য উপরে আমি যে দুটি পদ্ধতি আলোচনা করেছি তার জন্য বাজার থেকে সাবানের বেস কিনে আনতে হবে। এবার জানবো পুরোপুরি ভাবে রাসায়নিক পদ্ধতিতে কিভাবে এটি তৈরি করতে পারেন। যা যা উপকরণ লাগবে:

• কস্টিক সোডা বা সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড – ১০০ গ্রাম।

• ২৫০ মিলিলিটার ফুটানো ঠান্ডা পানি।

• নারিকেল, অলিভ অয়েল অথবা পামওয়েল ৭০০ গ্রাম।

উপরের তিনটি উপাদানের সাথে আপনি চাইলেও সুগন্ধির জন্য এসেনশিয়াল অয়েল কালার অথবা শুকনো ফুল পাতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে তরীর সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন কষ্টের একটি ক্ষার জাতীয় পদার্থ। যার কারণে গ্লাভস মাছ ও চশমা পরা অবশ্যই আবশ্যক। বাড়িতে বৃদ্ধ কিংবা শিশুদের সামনে এই ধরনের এক্সপেরিমেন্ট না করাই ভালো।

কিভাবে তৈরি করবেন

• প্রথমে একটি কাঁচের অথবা স্টিলের পাত্র নেই।

• সেটিতে কস্টিক সোডা ঢেলে নিন।

• মিশনের তাপমাত্রা বাড়ার পর সেটিকে ঠান্ডা হতে দিন।

• অন্য একটি পাত্রে তেল গরম করুন।

• তেল ও কস্টিক সোডার তাপমাত্রা যখন ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন মিশ্রণ করে ফেলুন।

• হ্যান্ড ব্লেন্ডার অথবা চামচ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন।

যখন মিশ্রণটি ঘন এবং ক্রিম পর্যায়ে পৌঁছাবে তখন সেটিতে এসেনশিয়াল অয়েল কিংবা রং মেশাতে পারবেন। তারপর একটি কাঁচের পাত্র অথবা সাবানের মূল্য ঢেলে নিন। এর থেকে ২ দিন অপেক্ষা করুন। যখন পুরোপুরি ভাবে সাবানটি শক্ত হয়ে তৈরি হয়ে যাবে তখন টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যবহার করুন। শুকনো জায়গায় রেখে এই ধরনের সবাইকে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এর উপকারিতা হচ্ছে পুরোপুরি ভাবে রাসায়নিক মুক্ত এবং নিজের ইচ্ছামত গন্ধ ও রং যুক্ত করা যায়।

আশা করি আপনারা এখন জেনে গিয়েছেন যে বাসায় কিভাবে সাবান তৈরি করবেন। যদিও বাজার হতে বিভিন্ন ফ্লেভার কোম্পানির নানা ধরনের সোপ পাওয়া যায় তবুও অনেকেই ঘরোয়া জিনিসপত্র ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। আর এই ধরনের আরো টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জেনে নিন বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন

আপডেট সময় : ১০:৩৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার্য জিনিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সাবান। আপনি ইন্টারনেটে নিশ্চয়ই সার্চ করেছেন বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন।যদিও এই প্রয়োজনীয় বস্তুটি আমরা দোকান হতে ক্রয় করে থাকি তারপরেও ঘরোয়া উপায়েও বাসায় বসে এটি তৈরি করতে পারবেন। অনেকেই হয়তোবা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না যে বাসায় কিভাবে এটির বানানো যায়। তাইতো নিয়মটি জানতে নিচের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন।

আপনার কাছে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকরণ থাকে তাহলে এটি বানানো মোটেই কঠিন কিছু নয়। সেই সাথে ঘণ্টাখানেক সময়ও প্রয়োজন। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি বিধায় সকল সাবানের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না। কারখানায় উৎপাদনের সময় চোখ তৈরিতে লাই নামক এক ধরনের ক্ষার জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করা হয়। কেউ চাইলে এই উপাদান বাদ দিয়ে বাসায় বসেই এটি তৈরি করতে পারবে।

বাড়িতে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন বিস্তারিত 

প্রথমেই আলোচনা করব মধু ও দুধ দিয়ে সাবান তৈরির প্রক্রিয়া। আসলে একটি সোপ তৈরিতে কি কি উপাদান ব্যবহার করেছেন সেটি নির্ভর করে সাবানের বেসের উপর। এই ধাপে দুধ দিয়ে আমরা তৈরি করব সাবানের বেস। এর জন্য আপনাকে অর্ধেক গ্লাস সাবানের বেস ঢেলে নিতে হবে। বেস আপনি বাজার বা অনলাইন হতে কিনতে পারবেন।। তারপর সেই বেসগুলোকে টুকরো টুকরো করে আস্তে আস্তে তাপ দিয়ে গলিয়ে নিতে হবে। এর জন্য মাইক্রোওভেন কিংবা জোলা ব্যবহার করতে পারবেন।

যখন পুরোপুরি ভাবে সাবানের বেসগুলো গলে যাবে তখন সেখানে কয়েক চামচ মধু এবং কয়েক ফাটা সাবানের রং মিশ্রিত করতে হবে। মধু এবং সাবানের রং উভয়েই আপনারা বাজারে পাবেন। সেই সাথে এই ব্যস্ত কিনতে পাওয়া যায়। তারপর মেশানো শেষ হলে কোন বক্সে সেগুলো জমতে দিন। পুরোপুরিভাবে জমা শেষ হয়ে গেলে সাবান গুলো বের করে আনুন এবং ব্যবহার করুন।

কিভাবে চা পাতা দিয়ে বাড়িতে সাবান তৈরি করব

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় একটি পানীয় হচ্ছে চা। যাদের নিয়মিত চা খাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের বাড়িতে নিশ্চয়ই চা পাতা আছে। অবাক করার বিষয় হচ্ছে এই চা পাতা দিয়েও সাবান তৈরি করা যায়। চা পাতার পাশাপাশি আরও প্রয়োজন দুটিব্যাগ এবং ২৫০ গ্রাম সাবানের বেস। এর সাথে আরো প্রয়োজন এসেনশিয়াল অয়েল এবং অরেঞ্জ অয়েল। প্রথমে সাবানের বেস গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে তাপ দিয়ে গুলিয়ে নিতে হবে।

মনে রাখবেন তাপ দিয়ে গলানোর সময় সেটাকে বারবার নিয়ে যেতে হবে। প্রায় দশ মিনিট ধরে নাড়ার পর আস্তে আস্তে সেটির মধ্যে চা পাতা এবং অন্যান্য উপাদান গুলি মিশ্রিত করে নাড়তে থাকুন। এরপর যেকোনো একটি পাত্রে অন্ততপক্ষে দুই দিন রেখে দিন। তারপর পুরোপুরি ভাবে সাবান গলে গেলে সেটি ব্যবহার করতে পারবেন।

ঘরে বসে সাবান তৈরি করার আরো একটি প্রক্রিয়া

ঘরে বসে কিভাবে সাবান তৈরি করবেন তার জন্য উপরে আমি যে দুটি পদ্ধতি আলোচনা করেছি তার জন্য বাজার থেকে সাবানের বেস কিনে আনতে হবে। এবার জানবো পুরোপুরি ভাবে রাসায়নিক পদ্ধতিতে কিভাবে এটি তৈরি করতে পারেন। যা যা উপকরণ লাগবে:

• কস্টিক সোডা বা সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড – ১০০ গ্রাম।

• ২৫০ মিলিলিটার ফুটানো ঠান্ডা পানি।

• নারিকেল, অলিভ অয়েল অথবা পামওয়েল ৭০০ গ্রাম।

উপরের তিনটি উপাদানের সাথে আপনি চাইলেও সুগন্ধির জন্য এসেনশিয়াল অয়েল কালার অথবা শুকনো ফুল পাতা ব্যবহার করতে পারেন। তবে তরীর সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন কষ্টের একটি ক্ষার জাতীয় পদার্থ। যার কারণে গ্লাভস মাছ ও চশমা পরা অবশ্যই আবশ্যক। বাড়িতে বৃদ্ধ কিংবা শিশুদের সামনে এই ধরনের এক্সপেরিমেন্ট না করাই ভালো।

কিভাবে তৈরি করবেন

• প্রথমে একটি কাঁচের অথবা স্টিলের পাত্র নেই।

• সেটিতে কস্টিক সোডা ঢেলে নিন।

• মিশনের তাপমাত্রা বাড়ার পর সেটিকে ঠান্ডা হতে দিন।

• অন্য একটি পাত্রে তেল গরম করুন।

• তেল ও কস্টিক সোডার তাপমাত্রা যখন ঠান্ডা হয়ে যাবে তখন মিশ্রণ করে ফেলুন।

• হ্যান্ড ব্লেন্ডার অথবা চামচ দিয়ে আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন।

যখন মিশ্রণটি ঘন এবং ক্রিম পর্যায়ে পৌঁছাবে তখন সেটিতে এসেনশিয়াল অয়েল কিংবা রং মেশাতে পারবেন। তারপর একটি কাঁচের পাত্র অথবা সাবানের মূল্য ঢেলে নিন। এর থেকে ২ দিন অপেক্ষা করুন। যখন পুরোপুরি ভাবে সাবানটি শক্ত হয়ে তৈরি হয়ে যাবে তখন টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যবহার করুন। শুকনো জায়গায় রেখে এই ধরনের সবাইকে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এর উপকারিতা হচ্ছে পুরোপুরি ভাবে রাসায়নিক মুক্ত এবং নিজের ইচ্ছামত গন্ধ ও রং যুক্ত করা যায়।

আশা করি আপনারা এখন জেনে গিয়েছেন যে বাসায় কিভাবে সাবান তৈরি করবেন। যদিও বাজার হতে বিভিন্ন ফ্লেভার কোম্পানির নানা ধরনের সোপ পাওয়া যায় তবুও অনেকেই ঘরোয়া জিনিসপত্র ব্যবহার করতে বেশি পছন্দ করেন। আর এই ধরনের আরো টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকুন।