ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত না জেনে নিন বিস্তারিত

Mohammad Abulllha Wahed
  • আপডেট সময় : ১২:১০:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১০৮ বার পড়া হয়েছে

ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত

প্রিয় বন্ধুরা, রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর সঠিক ইফতার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর ইফতার খাদ্য আমাদের শরীরকে শক্তি জোগায় এবং রোজার পর সুস্থ রাখে। তবে অনেকেই ভুল খাবার গ্রহণের কারণে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করেন। তাই জেনে নেওয়া জরুরি, ফতারে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত না?

ইফতার খাদ্য তালিকা সুস্থতার জন্য সঠিক খাবারের নির্বাচন

সারাদিন রোজা রাখার ফলে আমাদের শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে এবং শক্তির ঘাটতি অনুভূত হয়। তাই ইফতারে এমন খাবার রাখা উচিত যা শরীরকে দ্রুত উজ্জীবিত করবে এবং দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেবে।

ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত?

১. প্রাকৃতিক পানীয় ও তরল খাদ্য

  • খেজুর ও পানি: হজমে সহায়ক এবং শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়।
  • ডাবের পানি: শরীরে পানির অভাব পূরণে কার্যকর।
  • ঘরে তৈরি শরবত (লেবু, বেল, কমলা): প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।

২. সুষম পুষ্টিকর খাবার

  • ফলমূল (আপেল, কলা, খেজুর, পেঁপে): প্রাকৃতিক চিনির উৎস, যা দ্রুত শক্তি দেয়।
  • শাক-সবজি: হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন সরবরাহ করে।
  • সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর স্যুপ: শরীরের জন্য হালকা ও পুষ্টিকর।

৩. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

  • চিকেন/বিফ স্যুপ: শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • ডাল ও ছোলা: প্রোটিনের ভালো উৎস, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • দই ও দুধজাতীয় খাবার: হজমে সহায়ক এবং প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস।

৪. শক্তি বর্ধক খাবার

  • বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের বীজ (আখরোট, কাজু, চিয়া সিড): প্রাকৃতিক চর্বি ও শক্তি সরবরাহ করে।
  • হালকা শর্করাযুক্ত খাবার (ওটস, চিড়া, লাল আটা রুটি): দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

ইফতারে কি খাওয়া উচিত নয়?

অনেকেই ইফতারে বেশি ভাজাপোড়া বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে ফেলেন, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন

  • পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, সমুচা: অতিরিক্ত তেল ব্যবহারের কারণে হজমের সমস্যা তৈরি হয় এবং ওজন বাড়ে।
  • ফাস্ট ফুড (বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই): দ্রুত শর্করা বৃদ্ধি করে, যা পরে ক্লান্তি সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত মিষ্টি ও চিনিযুক্ত পানীয় পরিহার করুন

  • কোল্ড ড্রিংকস: কৃত্রিম চিনি থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে তোলে।
  • অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় শরবত (রুহ আফজা, মিষ্টি লাচ্ছি): তাৎক্ষণিক শক্তি দিলেও ওজন বৃদ্ধি ও হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন

  • ঝাল সমুচা বা অতিরিক্ত মসলা মেশানো ভাজাপোড়া খাবার: অ্যাসিডিটি এবং হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

প্রসেসড ফুড ও জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকুন

  • কেক, পেস্ট্রি, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার: এতে ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

রোজার সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার টিপস

  • ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করুন: বেশি তাড়াহুড়ো করে খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
  • পরিমাণে কম কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খান: অতিরিক্ত খাবার খেলে গ্যাস, বদহজম ও অস্বস্তি হতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন: ইফতারের পর ধীরে ধীরে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বেশি তেল ও চিনি এড়িয়ে চলুন: স্বাস্থ্যকর জীবনধারার জন্য এটি অপরিহার্য।

শেষ কথা 

সুস্থ থাকার জন্য ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিলে শরীর ও মন উজ্জীবিত থাকবে এবং রোজার পূর্ণতা লাভ হবে। তাই সঠিক খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন, সুস্থ ও সক্রিয় থাকুন।

ইফতারের সময় সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. ইফতারে কি খাওয়া সবচেয়ে ভালো?
খেজুর, পানি, ফলমূল, শাক-সবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সবচেয়ে ভালো।

২. ইফতারে অতিরিক্ত খেলে কি ক্ষতি হতে পারে?
বদহজম, গ্যাসের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি এবং শরীর ভারী লাগতে পারে।

৩. ইফতারে কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া কি ঠিক?
না, কারণ এতে প্রচুর চিনি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

৪. রোজায় পানি কীভাবে পান করা উচিত?
ইফতারের পর ধীরে ধীরে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। আপনার রমজান হোক সুস্থ ও আনন্দময়!

২০২৫ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমূহ। বিস্তারিত জানতে এখানে যান।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত না জেনে নিন বিস্তারিত

আপডেট সময় : ১২:১০:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

প্রিয় বন্ধুরা, রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার পর সঠিক ইফতার নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর ইফতার খাদ্য আমাদের শরীরকে শক্তি জোগায় এবং রোজার পর সুস্থ রাখে। তবে অনেকেই ভুল খাবার গ্রহণের কারণে শরীরে নানা সমস্যা তৈরি করেন। তাই জেনে নেওয়া জরুরি, ফতারে কি কি খাওয়া উচিত এবং কি খাওয়া উচিত না?

ইফতার খাদ্য তালিকা সুস্থতার জন্য সঠিক খাবারের নির্বাচন

সারাদিন রোজা রাখার ফলে আমাদের শরীর পানিশূন্য হয়ে পড়ে এবং শক্তির ঘাটতি অনুভূত হয়। তাই ইফতারে এমন খাবার রাখা উচিত যা শরীরকে দ্রুত উজ্জীবিত করবে এবং দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেবে।

ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত?

১. প্রাকৃতিক পানীয় ও তরল খাদ্য

  • খেজুর ও পানি: হজমে সহায়ক এবং শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়।
  • ডাবের পানি: শরীরে পানির অভাব পূরণে কার্যকর।
  • ঘরে তৈরি শরবত (লেবু, বেল, কমলা): প্রাকৃতিক ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।

২. সুষম পুষ্টিকর খাবার

  • ফলমূল (আপেল, কলা, খেজুর, পেঁপে): প্রাকৃতিক চিনির উৎস, যা দ্রুত শক্তি দেয়।
  • শাক-সবজি: হজমশক্তি বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন সরবরাহ করে।
  • সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর স্যুপ: শরীরের জন্য হালকা ও পুষ্টিকর।

৩. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

  • চিকেন/বিফ স্যুপ: শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • ডাল ও ছোলা: প্রোটিনের ভালো উৎস, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • দই ও দুধজাতীয় খাবার: হজমে সহায়ক এবং প্রোটিনের সমৃদ্ধ উৎস।

৪. শক্তি বর্ধক খাবার

  • বাদাম ও বিভিন্ন ধরনের বীজ (আখরোট, কাজু, চিয়া সিড): প্রাকৃতিক চর্বি ও শক্তি সরবরাহ করে।
  • হালকা শর্করাযুক্ত খাবার (ওটস, চিড়া, লাল আটা রুটি): দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

ইফতারে কি খাওয়া উচিত নয়?

অনেকেই ইফতারে বেশি ভাজাপোড়া বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেয়ে ফেলেন, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই কিছু খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন

  • পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, সমুচা: অতিরিক্ত তেল ব্যবহারের কারণে হজমের সমস্যা তৈরি হয় এবং ওজন বাড়ে।
  • ফাস্ট ফুড (বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই): দ্রুত শর্করা বৃদ্ধি করে, যা পরে ক্লান্তি সৃষ্টি করে।

অতিরিক্ত মিষ্টি ও চিনিযুক্ত পানীয় পরিহার করুন

  • কোল্ড ড্রিংকস: কৃত্রিম চিনি থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে তোলে।
  • অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় শরবত (রুহ আফজা, মিষ্টি লাচ্ছি): তাৎক্ষণিক শক্তি দিলেও ওজন বৃদ্ধি ও হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন

  • ঝাল সমুচা বা অতিরিক্ত মসলা মেশানো ভাজাপোড়া খাবার: অ্যাসিডিটি এবং হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

প্রসেসড ফুড ও জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকুন

  • কেক, পেস্ট্রি, অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার: এতে ট্রান্স ফ্যাট থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

রোজার সময় স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার টিপস

  • ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করুন: বেশি তাড়াহুড়ো করে খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে।
  • পরিমাণে কম কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খান: অতিরিক্ত খাবার খেলে গ্যাস, বদহজম ও অস্বস্তি হতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন: ইফতারের পর ধীরে ধীরে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বেশি তেল ও চিনি এড়িয়ে চলুন: স্বাস্থ্যকর জীবনধারার জন্য এটি অপরিহার্য।

শেষ কথা 

সুস্থ থাকার জন্য ইফতারে কি কি খাওয়া উচিত তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিলে শরীর ও মন উজ্জীবিত থাকবে এবং রোজার পূর্ণতা লাভ হবে। তাই সঠিক খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন, সুস্থ ও সক্রিয় থাকুন।

ইফতারের সময় সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. ইফতারে কি খাওয়া সবচেয়ে ভালো?
খেজুর, পানি, ফলমূল, শাক-সবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার সবচেয়ে ভালো।

২. ইফতারে অতিরিক্ত খেলে কি ক্ষতি হতে পারে?
বদহজম, গ্যাসের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি এবং শরীর ভারী লাগতে পারে।

৩. ইফতারে কোল্ড ড্রিংকস খাওয়া কি ঠিক?
না, কারণ এতে প্রচুর চিনি থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

৪. রোজায় পানি কীভাবে পান করা উচিত?
ইফতারের পর ধীরে ধীরে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। আপনার রমজান হোক সুস্থ ও আনন্দময়!

২০২৫ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমূহ। বিস্তারিত জানতে এখানে যান।